২২৪৫ সাল নাগাদ লিখা, ছবি, চলচ্চিত্র বা গান রেকর্ড এসব তথ্যের ভর হবে পৃথিবীর ভরের অর্ধেক ।

আমেরিকান ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্স জার্নালে প্রকাশিত একগবেশষণায় বিজ্ঞানিরা দেখিয়েছেন যে তথ্যেরও ভর আছে । আর হবেইনা বা কেনো, তথ্য কে তো এখন অনেক পদার্থবিদ পদার্থের শুধু পঞ্চম অবস্থা হিসাবেই দেখেন না (যা কিনা কঠিন, তরল, বায়বীয় ও প্লাজমার সাথে স্থান পায়) বরং প্রাচুর্যতার হিসাবে তার অবস্থান নাকি সর্বোচ্চে ।

আমরা প্রাকৃতিক সম্পদ কয়লা, তেল, গ্যাস, অ্যালুমিনিয়াম কপার, সিলিকন এগুলো ব্যবহার করে কম্পিউটার ব্যবস্থা এবং ডিজিটাল তথ্য পর্যালোচনা ও আদান-প্রদানের শক্তির যোগান দিচ্ছি  – এর মধ্য দিয়ে আসলেই আমরা প্রাকৃতিক অণুগুলোকে ডিজিটাল তথ্যে পরিবর্তন করছি, যা পদার্থের পঞ্চম অবস্থা ।

এভাবে চলতে থাকলে একটা সময় আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাব যে পৃথিবীর সমস্ত অনু পরিণত হবে ডিজিটাল বিট এবং কম্পিউটার কোডে, এ যেন বিট বাই বিট পরিবর্তন । আমরা বর্তমানে যে পরিমাণ তথ্য প্রতিবছরে তৈরি করি তার ব্যবহার যদি ৫০% হারে বাড়ে (যা কিনা খুবই সম্ভব) তবে আগামী ১৫০ বছরের মধ্যে যে পরিমাণ তথ্য আমরা তৈরি করবো তা পৃথিবীর সমস্ত অনুর সংখ্যার সমান হবে (এই গবেষনায় প্রাকৃতিক একটি অনু আর ডিজিটাল বিট সমান হিসাবে ধরা হয়েছে)।

আগামী ১৩০ বছরের মধ্যেই আমরা হয়তোবা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যাব যখন যখন পৃথিবীর সমস্ত উৎপন্ন বিদ্যুত শুধুমাত্র ডিজিটাল তথ্য তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণ করার কাজেই দরকার হবে । কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে  যে পরিমাণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে তা আমরা হয়তো তৈরিই করতে পারব না, অন্ততপক্ষে বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে তা সম্ভব না । ঐ পর্যায় সময়ের ব্যাপার মাত্র, আর যা কিনা হতে পারে বিপর্যয়কর।

যদিও একটা বিটের ভর খুবই সামান্য কিন্তু শুন্য না, ধরতে পারেন একটা ব্যাকটেরিয়ার ভরের সমান । বর্তমান গতিতে কম্পিউটার ব্যবস্থা এবং ডিজিটাল তথ্য পর্যালোচনা ও আদান-প্রদান চললে  যে পরিমাণ বিট আমারা তৈরি করব তাদের ভরকে একসাথে ধরলে দেখা যাচ্ছে যে ২২৪৫ সাল নাগাত পৃথিবীতে যে পরিমাণ তথ্য তৈরি হবে তা পৃথিবীর ভরের অর্ধেকের সমান হয়ে যাবে ।

এই প্রবন্ধের লেখক ডঃ ভপসন এর মতে তথ্য অন্যান্য পদার্থের মতো ভর এবং শক্তির মধ্যে অবস্থামত চক্রাকারে ঘুরতে থাকে । পৃথিবীতে এই মুহূর্তে যত তথ্য আছে তার ৯০ ভাগই তৈরি হয়েছে গত ১০ বছরে, আর করোনা মহামারি এই ডিজিটাল তথ্যের উৎপাদন গতিকে ত্বরান্বিত করল । কিন্তু এর শেষ কথায়? আমারা কি তাহলে আমরা সাইবর্গ হতে চলেছি নাকি প্রয়োজনীয় বিদ্যুত শক্তির অভাবে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে চলেছি?

মানুষ বুদ্ধিনাম, উপায় একটা বেরুবেই ।

লেখকঃ মোহ বাঙ্গালি [আপনি যদি এই সম্পর্কে আরো পড়তে চান এখানে একটা অবলম্বিত তথ্যসূত্র]

About সময় চাকা

আমরা বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত কিছু বাংলাদেশী। সময়ের চাকায় আমরা চলেছি সুখের সন্ধানে, সেই প্রস্তর যুগ থেকে শুরু করে আজও চলছে সন্ধান আর অনুসন্ধান । তাই চলুন সময়ের চাকায় পিষ্ট না হয়ে, সময় চাকা ধরে চলতে থাকি, সময়কে সুন্দর করে রাখার আশায়…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *